উদ্যোক্তা হওয়ার চেয়ে যখন উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়াটাই কঠিন - AD Income BD!

Earn Money Very Easy Way !!

Post Top Ad

Saturday, September 8, 2018

উদ্যোক্তা হওয়ার চেয়ে যখন উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়াটাই কঠিন



‘উদ্যোগ’ ও ‘উদ্যোক্তা’ দুটি আকর্ষণীয় শব্দ, যাতে মিশে আছে আশাবাদ ও সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা। একটি আইডিয়া তৈরি করুন,সে আইডিয়া অনুযায়ী কাজ করুন আর তারপরে মার্কেটিং করুন। আর দিনশেষে এটিএম মেশিন থেকে টাকা তুলুন! কিন্তু না, ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবসাবাণিজ্য বেশ প্রলোভনীয় হলেও এতে সাফল্য লাভের পথটি এতোটা মসৃণ নয়।
 সফল উদ্যোক্তারা কর্মঠ ও বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে একটি উদ্যোগ নেয়া, একটি ব্যবসা শুরু করাটা অনেক সহজ। স্মার্টফোনের মাধ্যমে কয়েক ক্লিকেই একটি ব্যবসা শুরু করা যায়। কিন্তু এই ব্যবসা বা উদ্যোগে সফল হওয়া কতটা সহজ, তাই নিয়েই আজকের এই আলোচনা।

আপনার আইডিয়া হতে পারে অসম, কিন্তু পরিশ্রম অব্যাহত রাখুন 

ধরা যাক, আপনার কাছে বেশ ভালো একটি আইডিয়া আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনি সেই আইডিয়াতে কিছু ফান্ড বিনিয়োগ করে আর মার্কেটিং করে ব্যবসায়িক দুনিয়ার অর্থই পালটে দিতে পারবেন। কারণ বাণিজ্য হচ্ছে এমন একটি জায়গা, যেখানে প্রত্যেক মুহূর্তে অপেক্ষা করছে নিষ্ঠুর কিছু সত্য, যা মেনে নেয়াটা ততটা সহজ হয় না।
আপনার কোম্পানির পণ্য কাস্টমারের কাছে বিক্রি হবে কিনা,তার কোন গ্যারান্টি নেই। আপনার কোম্পানি আগামী এক বা দু’ বছরের মধ্যে কিংবা আদৌ কখনো লাভের মুখ দেখতে পারবে কিনা, তারও নিশ্চয়তা নেই।
তাই যত তাড়াতাড়ি আপনি এই সত্য স্বীকার করে কাজ করতে পারবেন, তত তাড়াতাড়িই আপনি সফল উদ্যোক্তাদের একজন হিসেবে  প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন। সফল উদ্যোক্তারা জানেন যে, তারা যা করছেন, সে কাজে ভুল হতেই পারে। কিন্তু তারা সেই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে থাকেন। আপনাকেও তাই করা শিখতে হবে।
কাজে লাগানোর পূর্বে আইডিয়া বিভ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়!
আপনার আইডিয়া বিক্রি নাও হতে পারে। কিন্তু আপনাকে সে ঝুঁকি নিতেই হবে। আর তাই ভাবুন ও সে অনুযায়ী অক্লান্ত পরিশ্রম করুন, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সফলতার মুখ দেখতে পাচ্ছেন।

ব্যবসায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে সময়ের চিন্তা দূরে সরিয়ে রাখুন 

আপনি যদি ভেবে থাকেন, ব্যবসায় ক্যারিয়ার গড়া অনেক সহজ, তাহলে আপনার সে ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। একটি ব্যবসাকে শূন্য থেকে গড়ে তোলা অনেক কষ্টকর, সময়সাপেক্ষ আর গতানুগতিক চাকরির চেয়ে বেশি জটিল।
সফল উদ্যোক্তারা জানেন যে, তারাই নিজেদের বস। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে নতুন স্ট্র্যাটেজি নিয়ে চিন্তা করা, নতুন কিছু নিয়ে ভাবতে থাকা, কাস্টমারদের জন্যে নতুন কিছু তৈরি করার স্বপ্ন দেখা, এ সবকিছু সহজ কথা নয়।
একটি মার্কেটে শত শত প্রতিযোগীর সাথে লড়াই করে ক্রেতাদের ধরে রাখাও সহজ কথা নয়।  আর সেই ক্রেতাদের জন্য নতুন পণ্যকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতেও হয়। যারা সফল, তারা হাজারটা কষ্ট সহ্য করে, হাজারটা পতন সহ্য করেও ব্যবসায় টিকে থাকে। আর তাই একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনাকে সহনশীল হতে হবে, টিকে থাকা শিখতে হবে।

‘ঢিলেমির স্বভাব’ হতে পারে আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু 

প্রত্যেক উদ্যোক্তারই অনেক ধরনের শত্রু থাকে। যেমন, প্রতিযোগী, পর্যাপ্ত ফান্ডের অভাব, অপর্যাপ্ত ইচ্ছেশক্তি।  কিন্তু সবচেয়ে বড় শত্রু হতে পারে আপনার অলসতা বা ঢিলেমির স্বভাব।
আপনার কাছে দেশের সবচেয়ে ভালো আইডিয়া, যথেষ্ট পরিমাণ ফান্ড ও বুদ্ধিদীপ্ত টিম থাকতে পারে। কিন্তু এসব তখনই কাজে লাগবে, যখন আপনি আপনার আইডিয়াকে কাজে লাগিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন। আপনার কাজের দক্ষতা ও কাজের প্রতি ভালোবাসার ওপরই আপনার প্রতিটি পণ্যের  বিক্রি নির্ভর করে।
মাঝে মাঝে যখন হতাশ লাগবে, নিজের কাজের প্রতি বিরক্ত হয়ে যাবেন, তখন আবার কাজ ছেঁড়েছুঁড়ে গেমস খেলতে বসে যাবেন না যেন!  প্রত্যেক উদ্যোক্তাই তার ব্যবসায়িক জীবনের কোনো না কোনো সময় আলসেমি করেন। কিন্তু সফল উদ্যোক্তারা নিজেদের ঢিলেমি স্বভাবকে নতুন কর্মশক্তিতে পরিণত করতে পারেন।
সফল উদ্যোক্তারা নিয়ম মেনে, নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যেতে পারেন। কুঁড়েমি ঝেড়ে ফেলে প্রতিটি দিন ধরে তারা একটু একটু করে নিজেদের স্বপ্ন পূরনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। কারণ তাদের লক্ষ্য থাকে, মার্কেটে টিকে থাকা,প্যাশনের কাছে হার না মানা।

কাজের জন্য আত্মত্যাগ করতে হবে

ব্যবসা মানে সপ্তাহের দিনগুলোতে কয়েক ঘন্টা কাজ করা বা কিংবা পকেট ভর্তি টাকা আয় করা নয়। উদ্যোক্তা হিসেবে সাফল্য লাভের জন্য আপনাকে জীবনের অনেক আরামআয়েশ ত্যাগ করতে হবে। মাঝে মাঝে নিজের জীবনের সুখশান্তি বিসর্জন দিয়ে হলেও কাস্টমারের জন্যে সুখবর এনে দিতে হবে।
স্টিভ জবসের কথাই ধরুন। তিনি নিজের প্রিয় ফল আপেলের নামে  কোম্পানির নাম রাখলেন অ্যাপল । একসময় নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে বের করে দেয়াও হয়েছিল,তবু তিনি হাল ছেড়ে দেননি। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তার উদ্ভাবিত পণ্য মানুষের কাজে লাগবে, পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
স্টিভ জবস তার জীবনের অনেকটাই অ্যাপলের পেছনে খরচ করেছেন। তিনি এত সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেন আর এত রাতে ঘরে ফিরতেন যে, একসময় নিজের পরিবারের মানুষের সাথে তার দেখাসাক্ষাত কমে গিয়েছিলো। এমনও দিন গেছে, যখন কাজের চাপে খাবার খাওয়ার কথাও ভুলে গেছেন।
এভাবে নিজের সময়কে কাজে লাগিয়েই স্টিভ জবস লাখো মানুষের হাতে আইফোন তুলে দিতে পেরেছেন, মৃত্যুর পরও অমর হয়ে আছেন আমাদের মাঝে।

No comments:

Post a Comment